হসিনা রুশদি লুনা, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর সুযোগ্য সহধর্মিণী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়েত মৈত্রী হলের সাবেক এজিএস লুনা। স্বামী ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত হয়ে উঠেন। ইলিয়াসের অবর্তমানে বিশ্বনাথের রামধানা গ্রামের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়ার পাশাপাশি তিনি দলের তৃণমূল পর্যায়ে যোগাযোগও রক্ষা করে চলেছেন।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চমক দেখাতে প্রস্তুত লুনা। এদিকে বিএনপির হয়ে এই আসনে প্রার্থী হতে রাজনৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জনসমর্থন গড়ে তুলেছেন লুনা। তার স্বামীর হারানো আসন পুনরুদ্ধারে এরই মধ্যে এলাকায় শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন বলেও মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা।
২০১২ সালের ১৭ই এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেটের সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। স্বামী নিখোঁজের পর থেকে লুনাই বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর বিএনপির হাল ধরেন। তার নেতৃত্বেই বিএনপি ইউনিয়ন নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে চমক দেখায়। জানা গেছে, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রথম প্রার্থী হিসেবে দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। পরবর্তী চারটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে জয়ের মুখ দেখেননি। দীর্ঘ ২২ বছর পর বিএনপিকে ব্যর্থতার ধারা থেকে ফেরাতে সক্ষম হন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। ইলিয়াস আলীর ভালবাসার কারণে এলাকার অসংখ্য নেতাকর্মী নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। বিশ্বনাথে প্রতিটি ঘরে ঘরে ইলিয়াস আলী তার সৈনিক তৈরি করে রেখে গেছেন।
তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের বিএনপির আদর্শে লালিত হওয়ার ট্রেনিং দিয়ে গেছেন। তার প্রমাণ বিশ্বনাথবাসী ইলিয়াস আলী গুমের পর দেখিয়েছেন। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর বিশ্বনাথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সেই আন্দোলনে আমাদের তিন ভাই প্রাণ দিয়েছিল। বাংলাদেশে ইতিহাসে এটা বিরল। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বনাথ উপজেলাকে অন্যভাবে দেখে ও মূল্যয়ন করে। কারণ এটা ইলিয়াস আলীর এলাকা। ২০১২ সালে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হলেও আলোচিত এই আসনটি এখন ‘ইলিয়াস আলীর আসন’ বলে পরিচিতি লাভ করেছে। তাই আলোচিত এই আসনটি উদ্ধারে স্ত্রী লুনাকেই দায়িত্ব দিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড। হারানো এই দুর্গ পুনরুদ্ধারে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী ছাত্রনেত্রী লুনা।