নিজস্ব সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর : ফরিদপুরের বোয়ালমারী রেলস্টেশন এলাকা থেকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মোঃ নাজমুল শিকদার ওরফে টুকাই নাজমুল কে গাজা সহ গ্রেফতার করেছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ। টুকাই নাজমুল বোয়ালমারী পৌরসভাধিন ছোলনা গ্রামের মোঃ আজিজুল শিকদারের তৃতীয় পুত্র এবং চিহ্নিত মাদক সম্রাজ্ঞী বিন্দু মাসির ডান হাত বলে এলাকায় পরিচিত।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩ জুন ২০১৮ রবিবার রাতে বোয়ালমারী রেলস্টেশন এলাকা থেকে ২০০ গ্রাম গাজাসহ বোয়ালমারী থানার এসআই দিপংকর শ্যানাল ও এএসআই মো.আব্দুল আলীম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
টুকাই নাজমুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়েরকরে সোমবার তাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, মাদকের হোলসেলার ও শীর্ষ গাজা ব্যবসায়ী নাজমুল শিকদার ওরফে (টুকাই নাজমুল) এর উপর আমাদের বিশেষ নজরদারি ছিলো। গতকাল রাত ৯টার দিকে গোপনে সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ২০০গ্রাম গাজা নিয়ে সে একটি চায়ের দোকানে অবস্থান করছেন। এ সময়ে আমার থানার একটি চৌকশ পুলিশ দল তাকে গাজাসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইলসহ মাদক বিক্রির কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ও তিনি আরো বলেন- আমার থানায় কোন মাদক ব্যবসায়ীর বসবাস হতে দেওয়া হবে না।এর জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে কঠোর অবস্থানে রয়েছে থানা প্রশাসন। স্থানীয়রা জানায়- টুকাই নাজমুল এর কাছ থেকে বোয়ালমারী ও আশপাশের মাদক সেবী ও খুচরা মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে থাকে ।ফাঁকা মাঠ এলাকায় বাড়ি হাবার সুবাদে খুব সহজে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে স্বচ্ছন্দবোধ করে থেকে মাদক সেবন কারিরা। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের যুব সমাজের কাছে প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে দেওয়া হতো গাজাসহ নানা ধরণের মাদক। এর ফলে ধ্বংস হয়ে পড়ছিল তরুণ প্রজন্ম, নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছিল অনেক পরিবার। নেশার টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই,ডাকাতি ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ছিল যুব সমাজ। মাদকের বিভিন্ন চালান, বিভিন্ন স্থান দিয়ে তার বাড়িতে খুব সহজে প্রবেশ করছিলো বলে এমন অভিযোগ রয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান – টুকাই নাজমুল প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাদক দ্রব্য বিক্রি করত।
জানা যায়, ছোলনা গ্রামে সে দীর্ঘ দিন যাবত ইয়াবা ফেন্সিডিল-হিরোহিন-গাজাসহ বিভিন্ন মাদকের ব্যবসা করে আসছিল। এজন্য তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হতে হয়েছে একাধিকবার। অভিযোগ আছে, সে গ্রেফতার হলেও তার মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়নি।বিভিন্ন স্থানে লাইন করে জেলে বন্দি থাকা অবস্থায়ও পরিবারের অন্য সদস্যদের দিয়ে আইন ও সমাজ বিরোধী মরণ ব্যাধি মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন সে। তদবির করে আইনের ফাঁক গলিয়ে জামিনে বের হয়ে পুরো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করত সে। তার গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস প্রবাহিত হচ্ছে ।