রাজিউল হাসান পলাশ : নদীর জলে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। দেবী দুর্গা ফিরে গেলেন স্বামীর ঘরে। সারা দেশের ন্যায় ধামরাইয়েও প্রতিমা বিসর্জনের। মধ্য দিয়ে শুক্রবার শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শাস্ত্রীয় আচার শেষে ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনি আর সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার দর্পণ বিসর্জন করা হয়।
এ উপলক্ষে পূজামণ্ডপগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। রাজধানীতে বিকেলে দিকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে জাতীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। এর সাথে সাথেই ধামরাইয়ের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে এক এক করে প্রতিমা রথখোলা মোড়ে এসে একত্রিত হতে থাকে। শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাক-ঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমে হিন্দি চলচ্চিত্র ও দেবী-বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
সন্ধ্যায় ধামরাই পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় বাজার সড়কে যানজট লেগে যায়। মাধববাড়ির ঘাটে প্রথম বিসর্জন দেওয়া হয় মাধব মন্দিরের প্রতিমা এরপর এক এক করে বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমার বিসর্জন হতে থাকে। বিজয়া শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ধামরাই পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু অজিত চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক বাবু নন্দু গোপাল, পলাশ ঘোষ প্রমুখ। পৌরসভার নির্ধারিত কয়েকটি ঘাটে ধামরাই পৌরসভার ৪৩টি মণ্ডপের প্রতিমা একে একে বিসর্জন দেওয়া হয়।
প্রতিমা বিসর্জনের আগে মণ্ডপগুলোতে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ উৎসব। হিন্দু সধবা নারীরা দেবীপ্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দেন, নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরান। চলে মিষ্টিমুখ করানো, ছবি তোলা ও ঢাকের তালে তালে নাচ-গান। বিজয়া শোভাযাত্রা প্রতিমাগুলোকে ঘাটে নিয়ে আসে। এরপর একে এক নৌকায় তুলে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।
এ সময় মাধববাড়ির ঘাটে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অবস্থান নেয়। প্রতিমা বিসর্জনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ২০ এর সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম এ মালেক, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা প্রমুখ।
ইউএনও আবুল কালাম বলেন, প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর ধামরাইয়ে ১৯৪ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে, দুর্গাপূজার সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।