ডাকাতি করতে এসে ডাকাতদের চিনতে পারায় প্রধান শিক্ষিকা খুনের মুল হোতাকে গ্রেফতার করে পিবিআই রংপুর জেলা।
দীর্ঘ ৭ মাস পর পীরগঞ্জ থানাধীন বিরামপুর আদিবাসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিলকিছ আরা বেগম (৫২) কে তার নিজ বাড়ীতে গত ইং- ২০/১২/২০১৭ তারিখ রাত অনুমান ৮.০০ ঘটিকার দিকে খুন করে দুর্বৃত্তরা। ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন সহ মুল আসামী সিদ্দিকুর রহমান @ সিদ্দিকুল (২০) কে গত ইং- ০৩/৭/১৮ তারিখ গ্রেফতার করেছে পিবিআই রংপুর জেলা।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে পীরগঞ্জ আমলী আদালতে মামলা করলে আদালত ওসি পীরগঞ্জ থানাকে মামলা রুজুর নির্দেশ দিলে পীরগঞ্জ থানার মামলা নং-১৪, তারিখ- ০৯/০১/১৮,ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে রুজু করে পিবিআই রংপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
পিবিআই রংপুর জেলা কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ভিকটিম বিলকিস আরা বেগম বিরামপুর আদিবাসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বাড়ীতে তার স্বামীসহ একাই থাকতেন। আসামী সিদ্দিকুর রহমান @ সিদ্দিকুল ইতিপূর্বে দুইবার ভিকটিমের বাড়ী চুরি করেছে। একবার হাতে নাতে ধরা পরায় ৪ মাস জেল হাজতে আটক ছিল। সেই ক্ষোভ থেকে ঘটনার ৩ দিন আগে সে সহ আরো চার জন আসামী ভিকটিমের বাড়ী পুনরায় চুরি করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী সিদ্দিকুর সহ আরো ০৪ জন ঘটনার দিন ইং- ২০/১২/১৭
তারিখ মাগরিবের নামাজের পর তারা ভিকটিমের বাড়ীর বিভিন্ন গাছের বাগানের পিছনে তৎ পেতে থেকে। ভিকটিমের স্বামী এশার নামাজের জন্য মসজিদে গেলে আসামী সিদ্দিকুল সহ আরো ০২ জন ভিকটিমের বাড়ীর ছাদ ঘেষা কাঠাল গাছ দিয়ে ছাদের উপরে উঠে সিড়ি বেয়ে বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করে এবং অপর ০২ জন বাথ রুমের ছাদের ফাকা অংশ দিয়ে বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করে। তারা বিভিন্ন রুমে থাকা আসবাব পত্র তছনছ করে। তারা ওয়ার ড্রবের ড্রয়ার ভেঙ্গে প্রায় ০৩ ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ প্রায় ২,০০,০০০/- টাকা ডাকাতি করে । ভিকটিম ডাকাতদেরকে চিনতে পারলে ডাকাতেরা ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে ও ঘাড় মটকিয়ে হত্যা করে মেঝেতে ফেলে রাখে। ঠিক ঐ সময় ভিকটিমের স্বামী এসে মেইন গেটে নক করলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।
পিবিআই রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম-সেবা জানান ভিকটিম সরকারী প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হওয়ায় মামলাটি খুবেই গুরুত্ব পুর্ন ছিল। সূষ্ঠু তদন্তের জন্য টিম গঠন করা হয়। মামলার মুল রহস্য উৎঘাটন সহ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মুল আসামী গ্রেফতার হওয়ায় ও রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। তদন্ত কারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবির জানান, অনেক পরিশ্রম করে মুল হোতা আসামী সিদ্দিকুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে বিজ্ঞ আদালতে নিজেকে জড়িয়ে আরো ০৪ ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে সিআরপিসি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। অবশিষ্ট আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রয়োজনে মোবাইল নম্বর: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার -০১৭৬৯৬৯০৩৫৯