আমিনুল ইসলাম, কাতার প্রতিনিধিঃ কাতারে বাংলাদেশি একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ মাশহুরুল হক স্মৃতি স্কুল এন্ড কলেজ’ মিলয়াতনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ এম.এইচ.এম স্কুল এন্ড কলেজের যৌথ উদ্যোগে রবীন্দ্র-নজরুল জন্ম জয়ন্তী উদযাপন হয়েছে।মঙ্গলবার দোহার আবু হামর এলাকায় স্কুলের হল রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবি প্রতিভা ও বাংলা সাহিত্যে তাঁদের অবিস্মরণীয় অবদান স্মরণ করা হয়।স্বত:স্ফূর্ত অংশ গ্রহণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছিল,তাঁদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন,কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব আজগর হোসেন বিশেষ অতিথি দূতাবাসের তৃতীয় সচিব মোঃ মনিরুজ্জান চৌধুরী।
বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দা ফারজানা শারমিনের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক লেফটেল্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আনোয়ার খুরশেদ (অবসরপ্রাপ্ত), অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দিন, উপাধ্যক্ষ জুলফিকার আজাদ, তফসির উদ্দিন প্রমুখ।
বাংলা সাহিত্যের দুই দিকপাল রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল বাঙালির আত্মপরিচয়ে যেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে আছেন তেমনি তাঁদের দর্শণ বাঙালি জাতিকে চিরন্তন সত্ত্বার সন্ধান দেয়।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ছাত্রছাত্রীরা।
প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আনোয়ার খুরশী অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ-নজরুল ইসলাম ছিলেন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। এদের চিন্তা-চেতনা-দর্শন আমাদের ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে লালন করতে পারলে আমরা সঠিক মানুষ হতে পারবো।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র-নজরুলের জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন ‘বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজে’র প্রভাষক মোঃ আবু শামা ও শামসাদ জেরিন। তারা উভয়েই রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে মানবতাবাদ এবং নজরুল কাব্যের সাম্যবাদ নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব আজগর হোসাইন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নজরুল ইসলামের জীবন কর্মের বিভিন্ন দিক আলোকপাত করে বলেন, ‘রবীন্দ্র-নজরুল মানুষে জাতিভেদ প্রথাকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। তাঁরা উভয়ই মানুষকে অপমান ও জাসত্ব থেকে মুক্ত করার জন্য সাহিত্য সাধনা করেছেন।’ তিনি আমারে প্রাত্যাহিক জীবনে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের আদর্শকে অনুশীলন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং তাঁর বক্তব্য শেষে এই কলেজের বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘দি মিরর’ ২০১৭-১৮ এর মোড়ক উন্মোচন করেন
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল নৃত্য, গীত ও কবিতা আবৃতি।
রবীন্দ্রনাথের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান কলেজ উপাধ্যক্ষ জুলফিকার আজাদ ও অত্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সৈয়দা ফারজানা শারমিন। ‘কুলি-মজুর’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান অত্র স্কুলের সহকারি শিক্ষক মোঃ তাফসির উদ্দীন। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী অদ্বিতীর সরকারের কণ্ঠে ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না’ রবীন্দ্র সঙ্গীতটি উপস্থিত সবাইকে অভিভূত করে। রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নজরুল গীতির বিভিন্ন গানের তালে তালে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীরা।