সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন- সাজেদা চৌধুরী

মনির মোল্যা :  জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য ও সৈয়দ আশরাফের আত্মীয় আনোয়ারুল কবীর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সিনিয়র সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি ও তার রাজনৈতিক প্রতিনিধি বিশিষ্ট কৃষিবৃদ শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী।

২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শিলা ইসলাম মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি একমাত্র মেয়ে রীমা ইসলামসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেও তিনি চিকিৎসাধীন থাকায় শপথ নেওয়ার জন্য সময় চেয়েছিলেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আশরাফুল ৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুজিব বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আব্দুল জলিল গ্রেফতার হলে সৈয়দ আশরাফুল আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে আশরাফুলের পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। পিতার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফুল যুক্তরাজ্যে চলে যান এবং লন্ডনের হ্যামলেট টাওয়ারে বসবাস শুরু করেন। লন্ডনে বসবাস কালে তিনি বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। সেসময় তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ যুব লীগের সদস্য ছিলেন। আশরাফুল ফেডারেশন অব বাংলাদেশি ইয়ুথ অর্গানাইজেশন (এফবিওয়াইইউ) এর শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে আশরাফুল দেশে ফিরে আসেন এবং জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। একমাস এক সপ্তাহ দফতরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নিজের অধীনে রাখা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন।

সৈয়দ আশরাফুলের স্ত্রী শীলা ইসলাম লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন। ২৩ অক্টোবর ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাদের একমাত্র মেয়ে রীমা ইসলাম পেশায় একজন ব্যাংকার । মৃত্যুর আগে সৈয়দ আশরাফ ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x