মনির মোল্যা : এবছর ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে এবার হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। অনুকূল আবহাওয়ার আর নিকোব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব এড়িয়ে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যদিও কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড়ে কোনো কোনো এলাকায় ধানের ক্ষতি হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে দাবি কৃষি বিভাগের।
বোরো ধান সেচ নির্ভর। গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরুতেই ফরিদপুরে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর বোরো আবাদে পানি সঙ্কট হয়নি। তাই ফলনও ভালো হয়েছে। মাঠে মাঠে ধান কাটা আর মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের।
এবছর ১ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে চলতি বছর সালথা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ১ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে এবং আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৬ টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশাবাদী উপজেলা কৃষি অফিস।
সরেজমিনে ফরিদপুরের সালথায় উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ দিগন্ত বিস্মৃত সবুজের সমারোহে ছেঁয়ে আছে সোনালি ধানে। গত দু’তিন দিনের বৃষ্টিতে ধানক্ষেতে জমেছে পানি। কাদাপানি মাড়িয়েই কৃষক ধান কেটে আঁটি বাঁধছেন। কৃষকেরা বোঝাই করে সে ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। এরপর মাড়াই মেশিনে ধান, খড় আলাদা করে রোদে শুকাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণীরা।
এসময় কর্মব্যস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর একদিকে ছিল কালবৈশাখী ঝড়, শিলা, অতিবৃষ্টি অন্যদিকে নিকোব্লাস্ট আর বিএলবি রোগের আতঙ্ক। তাই চলতি বছর বোরো আবাদ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন চাষীরা। তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে ধান ঘরে ওঠায় স্বস্তি মিলেছে তাদের।
এছাড়া একাধিক কৃষক জানান, আমরা কয়েক দফা শিলাবৃষ্টি আর কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে খুবই ভয়ে ছিলাম শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলতে পারব কিনা। তবে আল্লাহর রহমে খুবই ভালো ফলন পেয়েছি আমরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মাদ বিন ইয়ামিন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সঠিক উদ্যেগ গ্রহন করায় প্রতি বছরের চেয়ে এবার বোরো ধানের ভাল ফলন হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সার কীটনাশক ও অন্যান্য পরামর্শ কৃষকরা ক্ষেতে প্রয়োগ করায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি অফিসার আরও জানান, কয়েকদিন আগে থেকেই ধান কাটার কাজ শুরু হয়েছে। সপ্তাহ খানিকের মধ্যে ধান কর্তনের কাজ শেষ হবে। ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত সব কিছু ঠিক থাকলে বোরো উৎপাদন গত কয়েক বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। এর সাথে তিনি কৃষকদের অতিদ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে পরামর্শ প্রদান করেছেন।