মনির মোল্যা : শীত মৌসুমে ফরিদপুরের সালথায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বোরো ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করণের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুকনা ও আদর্শ বীজতলা। দ্বিতীয়বারের মতো এবছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই শুকনা ও আদর্শ বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
উপজেলা কুষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় এবছরে সর্ব প্রথম শুকনা ও আদর্শ বীজতলার মাধ্যমে বোরো ধানের চারা তৈরি করা হয়েছে। প্রচলিত নিয়মে বোরো ধানের চারা তৈরির চেয়ে শুকনা ও আদর্শ বীজতলার মাধ্যমে চাষীদের বেশি সুবিধা হয়। প্রচলিত নিয়মে ধানের চারা রোপন করার উপযোগি হওয়ার আগেই চারা রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। আর শুকনা ও আদর্শ বীজতলা তৈরি করতে প্রচলিত নিয়ম পালন করা লাগে না। শুকনা বীজতলা তৈরি করতে সেচের প্রয়োজন হয় না। সরাসরী বীজ বপন করা যায়, বীজ ভেজানো এবং অংকুরিত করা লাগে না। অল্প সময়ে ভাল চারা পাওয়া যায়। পোকা-মাকড় ও রোগের আক্রমন হয় না। চারা থাকে সুস্থ্য সবল।
তীব্র শীতে বীজ অংকুরিত হয়। শৈত্য প্রবাহে চারার কোন ক্ষতি হয় না। কোল্ড ইঞ্জুরী হয় না। কম বয়সে চারা রোপন করার উপযোগি হয়। চারা উত্তোলনে শ্রমিক লাগে কম। চারা উত্তোলনের সময় চারা ইঞ্জুরী হয় না। শুকনা বীজতলায় চারা ধৌত করা লাগে না। পদ্ধতিটি সহজ বিধায় কৃষকেরা সহযেই প্রযুক্তিটি গ্রহন করে। চারা উৎপাদণ করতে সার প্রয়োগ করা লাগে না। চারা উৎপাদণের খরচ কম, সর্বপরী ফলন বাড়ে। আদর্শ বীজতলা তৈরির জন্য বীজ বপন সহজ, পরিচর্যা ও সেচ গ্রহন সহজ, চারা থাকে সুস্থ্য ও সবল, আদর্শ চারা পাওয়া যায়, রোগ ও পোকা মাকড় সহযেই দমন করা যায়, সর্বপরী ফলন বাড়ে।
গট্টি ইউনিয়নের কৃষক নুরুদ্দীন শেখ বলেন, আমি এবছর বেশ কিছু জায়গায় শুকনা বীজতলা তৈরির পদ্ধতি গ্রহন করেছি। আগের প্রচলিত নিয়মের চেয়ে কম খরচে শুকনা বীজতলার মাধ্যমে চারা অনেক ভাল হয়েছে।
ভাওয়াল ইউনিয়নের কৃষক জয়নদ্দিন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মরামর্শ অনুযায়ী আগের প্রচলিত নিয়ম বাদ দিয়ে এবার আদর্শ বীজতলা তৈরি করার কারণে চারা অনেক ভাল হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মাদ বিন-ইয়ামিন বলেন, সহজ পদ্ধতিতে উপজেলা ৮টি ইউনিয়নেই এবছর উদ্বুদ্ধকরণের মধ্যে শুকনা ও আদর্শ বীজতলা তৈরিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। আগের প্রচলিত নিয়মের চেয়ে এই পদ্ধতিতে সল্প খরচে ও সহজেই চারা তৈরি করতে পারছে কৃষকরা। শুকনা ও আদর্শ বীজতলা তৈরিতে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।