সাংবাদিক সুবর্ণা নদী হত্যায় মামলায় সাবেক শ্বশুর গ্রেফতার

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভির পাবনা প্রতিনিধি সুবর্ণা নদী হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত সাংবাদিকের মা বুধবার বিকাল ৩টায় পাবনা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় সুবর্ণার সাবেক শ্বশুর আবুল হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এদিকে মামলার পরই পুলিশ আবুল হোসেনকে (৬০) গ্রেফতার দেখায়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আবুল হোসেন সাংবাদিক সুবর্ণা নদীর সাবেক স্বামী রাজিবের বাবা। তিনি ইড্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানি) এবং শিমলা ডায়াগনস্টিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।


আর কে আকাশ, পাবনা প্রতিনিধি :  পাবনা থানার ওসি ওবাইদুল হক জানান, নিহত নদীর মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনজন এজাহার নামীয় এবং ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পরই পুলিশ প্রধান আসামি আবুল হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানান ওসি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় নিজ বাসার সামনে সুবর্ণা নদীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ চাঞ্চল্যকর এই হত্যার রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি। পুলিশ বলছে, ব্যক্তিগত বিরোধের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে সুবর্ণা হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বুধবার দুপুরে পাবনা শহরে মানববন্ধনসহ সমাবেশ করেছেন গণমাধ্যমকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ।

জানা গেছে, সুবর্ণা নদী তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলার কারণেই সুবর্ণাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। মঙ্গলবার রাতে নিহতের বড় বোন চম্পা খাতুন জানান, আবুল হোসেনের ছেলে রাজীবের সঙ্গে তিন-চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল সুবর্ণার। বছর খানেক আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর সুবর্ণা পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে একটি যৌতুক মামলা করেন। এ মামলায় সুবর্ণা তার সাবেক স্বামী রাজীব ও তার বাবা আবুল হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করেন। গতকাল এ মামলার সাক্ষ্য দেয়ার দিন ছিল।
এতে সুবর্ণা তার পক্ষে আদালতে সাক্ষ্যও উপস্থাপন করেন। চম্পার দাবি, মামলায় ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুবর্ণাকে হত্যা করেছে।

এদিকে বুধবার বাদ আছর পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে সাংবাদিক সুবর্ণা নদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় গণমাধ্যমকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। পরে তাকে পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট গোরস্থানে দাফন করা হয়।

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments