ষ্টাাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের কমলাপুরে নিহত এটিএম রফিকুল হুদা পিন্টু দূর্ঘটনাজনিত কারণে মারা যান। তার মৃত্যুর সাথে পুত্র ফারদিন হুদা মুগ্ধ কোনভাবেই জড়িত না। সম্পত্তির লোভে আজ তাকে পরিকল্পিতভাবে পিতার হত্যাকারী বানানো হয়েছে। ষড়যন্ত্রের বলি হয়ে তার সম্ভাবনাময় জীবন নষ্ট হতে চলেছে। মিথ্যা মামলা থেকে নিস্কৃতি দিয়ে মুগ্ধু’র জীবন রক্ষা জরুরী।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসকাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন নিহত রফিকুল হুদা পিন্টুর স্ত্রী সিলভিয়া হুদা আলো। ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ওই দূর্ঘটনায় নিহত হন রফিকুল হুদা পিন্টু। সংবাদ সম্মেলনে সিলভিয়া হুদা আলো লিখিত বক্তব্যে বলেন, এ দূর্ঘটনায় আমার স্বামী মারা যান। অথচ আমাদের সাথে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই আমার স্বামীর ভগ্নিপতি আকরামউদ্দিন আহমেদ মুগ্ধকে পিতার হত্যাকারী সাজিয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৭ তারিখ- ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তিব্র মশার কারণে কয়েল জ্বেলেছিলাম। ঘরের আলনার নিচে কাপড় রাখা ছিল। ফ্যানের বাতাসে তাতে আগুন ধরতে পারে। হঠাৎ আমি র্ফ র্ফ শব্দ শুনে দেখি আগুন জ্বলছে। এরপর মুগ্ধ আর আমি সেখানে প্রথম আগুন নেভাতে যাই। কয়েক মিনিট পর আমার স্বামী সেখানে আসেন এবং আগুন নেভাতে এগিয়ে গেলে তার পরনের লুঙ্গিতে আগুন ধরে যায়। এসময় সে দৌড়ে নিচে নেমে গেলে ভাগ্নে নর্ঝির তাকে একটি কাঁথা জড়িয়ে আগুন নেভান।
আকরামউদ্দিনতো ঘটনার সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেনই না এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কার নিকট থেকে জেনে আকরামউদ্দিন মামলার অভিযোগ করলেন? আর ওই ঘটনায় আমি এবং পুত্র মুগ্ধও অগ্নিদগ্ধ হই এবং ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি হই। অথচ এজাহারে সে কথা এড়িয়ে যান কেনো? তিনি কার নিকট থেকে জানলেন আমার স্বামীর হাতে সিগারেট ছিলো? মুগ্ধ কখনোই তার পিতাকে মোটর সাইকেল কিনে দিতে বলেনি। অথচ তাকে কে বললো মুগ্ধ’র সাথে মোটর সাইকেল কেনা নিয়ে বাদানুবাদ হয়েছে? এ থেকেই বোঝা যায় তার অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো। সম্পত্তি গ্রাসের উদ্দেশ্যে তিনি মুগ্ধ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে এ মামলাটি দায়ের করেছেন।
এসময় তিনি সিলভিয়া হুদা করে অভিযোগ বলেন, ভগ্নিপতি আকরামউদ্দিনের নিকট আমার স্বামী ২ লাখ টাকা পেতেন। এই টাকা ফেরত দেয়ার জন্য দূর্ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগেও চাপ দিলে তাদের মাঝে বাদানুবাদ হয়। এতে আকরাম সাহেব ক্ষুব্ধ হন। ৭৫ বছর বয়সী বয়োবৃদ্ধ আকরামউদ্দিন ঠিকমতো চোখে দেখতেন না, কানেও শুনতেন না। এ দূর্ঘটনার পর তার ক্ষোভেরই বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন আকরামউদ্দিন। সিলভিয়া হুদা মিথ্যা মামলা থেকে তার পুত্র মুগ্ধ’র নিস্কৃতি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল পুলিশ মুগ্ধকে আটক করেছে। গ্রেফতারের পর তাকে ঢাকা থেকে এনে যশোরের শিশু সংশোধনাগারে নেয়া হয়। তবে মামলার শুনানীর জন্য তাকে বর্তমানে ফরিদপুর জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। মামলার বাদি আকরামউদ্দিন আহমেদ গত বছর মৃত্যুবরণ করেন।