লিবীয় উপকূলে অন্তত ১শ শরণার্থী ও অভিবাসী নিখোঁজ রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে তারা সবাই হয়তো মারা গেছে। এরই মধ্যে সমুদ্র তীরে ভেসে আসা ৩ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছেভ
শরণার্থী ও অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকার ইঞ্জিন বিস্ফোরণে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। উপকূলরক্ষী বাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
লিবিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্বলতা এবং ইতালির কাছাকাছি অবস্থানের কারণে শরণার্থীদের কাছে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম পছন্দের তালিকায় রয়েছে দেশটি। ফলে লিবিয়া হয়েই বিপজ্জনক জলপথে পাড়ি দিচ্ছেন হাজার হাজার শরণার্থী ও অভিবাসী। তাদের সবার লক্ষ্য ইউরোপের দেশগুলো।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাজধানী ত্রিপলি থেকে পূর্ব দিকে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করে লিবীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া আমরি সুইলেহ নামের এক শরণার্থী বলেন, আমি যখন নৌকায় অনেক লোকজনকে দেখতে পাই, তখন আমি নৌকায় উঠতে চাইনি। কারণ আমাদের জানানো হয়েছিল নৌকায় মাত্র ২০ জন যাত্রীকে নেয়া হবে। আমরি সুইলেহ একজন ইয়েমেনের নাগরিক।
তিনি আরও বলেন, ‘মানব পাচারকারীরা আমাকে গুলি করার ভয় দেখিয়ে নৌকাতে তুলে নেয়। নৌকাটি মাত্র ৮ মিটার লম্বা ছিল। আমি লোকজনকে নৌকা থেকে পানিতে পড়ে যেতে দেখেছি। আমি আমার সব ইয়েমেনি বন্ধুকে হারিয়েছি। ওরা আমার সঙ্গেই ছিল।’
বাকারি বাদি নামে আরও এক শরণার্থী বলেন, ‘ভোরের দিকে একজন পানিতে পড়ে যান। তিনি নৌকায় ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। সে সময় সবাই নৌকার ক্যাপ্টেনকে বলছিলেন যে লিবিয়ায় ফিরে যেতে। কিন্তু তার পরেই নৌকার ইঞ্জিনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অনেক মানুষ আহত হয়ে সমুদ্রে ছিটকে পড়ে।’
দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে ঠিক কতোজন যাত্রী ছিল তা এখনও জানা যায়নি। তবে নৌকাটিতে ১৫ জন নারী ছিল। তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। জীবিত উদ্ধার হওয়া ১৬ জনই পুরুষ। নৌকা ডুবে যাওয়ায় নিখোঁজ হওয়াদের মধ্যে ৫ শিশুও রয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের বয়স ১২ বছরের নিচে।
২০১৭ সালে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিস,ইতালি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাড়ি জমিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী। চলতি মাসের শুরুর দিকে তিউনিশিয়ার উপকূলে শরণার্থী এবং অভিবাসী বোঝাই একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ১১২ জন নিহত হয়।