মন্ত্রিসভাকে বিদায়  জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 

আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো বর্তমান মন্ত্রিসভা বৈঠক— টেকনোক্রেট চার মন্ত্রীকে বহাল রেখেই শেষ হলো এ বছরের মন্ত্রিসভা।

বাসস: সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা সদস্যদের বিদায় জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ তার দলকে আবার নির্বাচিত করলে বাকি কাজ নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে শেষ করবেন।

শেষ বৈঠকে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, বীমা করপোরেশন আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। সুপারিশ করা হয় নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠনের।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই সদস্যদের কাছ থেকে বিদায় নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সরকারের মন্ত্রিসভার এটাই শেষ বৈঠক উল্লেখ করে মন্ত্রীদের উদ্দ্যেশে বলেন, এখন নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নির্বাচনের কাজ করতে হবে।

জনগণ যদি আবার তার দলকে নির্বাচিত করেন, তবে আবার মন্ত্রিসভায় হয়তো অনেকের সঙ্গে দেখা হতে পারে। তার পুরোটাই নির্ভর করছে জনগনের ওপর বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়। আইনটিতে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অনুমতি রয়েছে, ন্যায্য দাবি আদায়ে শৃঙ্খলা মেনে আন্দোলন করা যাবে। বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে। কমিটিকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সুপারিশ অনুযায়ী সংবাদপত্রে কর্মরত সম্পাদক ও অন্যান্য পদের জন্য মোট ১১ ক্যাটাগরিতে বেতন কাঠামো ঠিক করার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া, সাধারণ বীমা ও জীবন বীমার অনুমোদিত ও পরিশোধিত বীমার পরিমাণ বাড়িয়ে, বীমা করপোরেশন আইনের খসড়ায়ও অনুমোদন দেয়া হয়। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

শ্রম আইন:

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৮ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

২০১৩ থেকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়, ২০০৬ সালের করা শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কানাডা ও আইএলও এর সুপারিশ বজায় রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের ধর্মঘটে বাধ্যবাধকতা, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠন পরিচালনায় বাধ্যবাধকতা, অবসর গ্রহণে সার্ভিস বেনিফিট ৩০ দিনের পরিবর্তে ৪৫ দিন করা হয়েছে। পঁচিশ বছর চাকরি করলে পূর্ণ বেনিফিট পাবে এক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ৬০ বছর।

সমিতি গঠন:

নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে তিন মাসের মধ্যেও সমিতি গঠন করতে পারবে, আগে এটা ছিলো না।

শ্রমিকরা ধর্মঘট করতে পারবেন-শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেন। তবে নাম হবে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি।

ইপিজেডের বিনিয়োগকারীদের মতামত নিয়েই এ আইন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

২. বীমা করপোরেশন আইন- এটি ১৯৭৩ সালের আইন।

জীবন বীমা ও সাধারণ বীমাকে একীভূত করা হয়েছে।

পরিচালনা পর্ষদ:

১. সাত জন থেকে বাড়িয়ে ১০ জন কোরাম হবে পাঁচ জনের।

২. মূলধনের পরিমান বাড়ানো হবে, আগে ২০ কোটি করে ছিল, অনুমোদিত ও পরিশোধিত ক্ষেত্রে ছিল এখন তা বাড়ানো হয়েছে।

৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইন চূড়ান্ত অনুমোদন-এটি ঢাকায় হবে।

৫. বর্তমানে পার্বত্য এরিয়াতে ভূমি জটিলতা দূর করতে বণ্টনে সমতা আনা হয়েছে।

৬. নবম ওয়েজ বোর্ড: সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রিকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সকল সুপারিশ পেশ করতে হবে—আহবায়ক কমিটিতে স্বরাষ্ট্র, শ্রম, শিল্পমন্ত্রী থাকবেন আর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে তথ্য মন্ত্রণালয়। মোট ছয় গ্রেডে বেতন বাড়ানো হবে। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জন্য শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওয়েজবোর্ড করার অনুরোধ করা হয়েছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments