ফরিদপুর -১ আসনের এমপি আব্দুর রহমান কে বর্জন করলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা

বোয়ালমারী প্রতিনিধি : ফরিদপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপিকে জনবিচ্ছিন্নতার দায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা বর্জনের ঘোষণা দিলেন।

আজ শনিবার ২০ অক্টোবর বোয়ালমারী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের লক্ষ্যে এই ঘোষণা দেন।

বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়ার সভাপতিত্বে এ বর্ধিত সভায় তৃণমূল‌ নেতাকর্মীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নেতা এক মঞ্চে নৌকার পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা থেকে জনবিচ্ছিন্নতার দায় আব্দুর রহমান এমপি কে বর্জন করেন নেতাকর্মীরা। সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জননেতা লিয়াকত শিকদার, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন এর উপস্থিতিতে বিগত দশ বছরে পরীক্ষিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একাধিক বক্তা বলেন- বিগত দশ বছর যাবত বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিক গণ কোণঠাসা হয়ে সময় পার করছেন, এমপি আব্দুর রহমানের কাছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চেয়ে অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছে বিএনপি জামায়াতের লোক জন। বিভিন্ন কমিটিতেও স্থান পেয়েছে তারা। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শুরু করে সাধারণ নৈশপ্রহরী নিয়োগেও নিয়োগ বাণিজ্য করে বিএনপি জামায়াতের লোক কে সুবিধা দিয়েছেন এমপি। টিআর, কাবিখা প্রকল্প নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে সাধারণ মানুষ কে বঞ্চিত করা হয়েছে। রাজাকার পরিবারের সদস্যদের সোলার প্যানেল উপহার হিসেবে দিলেও প্রকৃত নেতাকর্মীদের ভাগ্যে জুটেছে হামলা, মামলা, হয়রানি। বক্তারা বলেন মনোনয়নে ভুল করলে কোন ভাবেই জয় লাভ করা সম্ভব নয়। আব্দুর রহমান কে ছাড়া যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক আমরা বিপুল ভোটে তাকে বিজয়ী করব।

বর্ধিত সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য , কৃষক লীগের সহ-সভাপতি, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম সাধারণ নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন – পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন সত্যি দুঃখজনক ব্যাপার। নৌকার টিকিট নিয়ে নৌকার কর্মীদের হয়রানি প্রধানমন্ত্রীকে অপমানের শামিল। আপনাদের কে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে, উন্নয়ন কে আরও বেগবান ও তরান্বিত করতে হবে, বাংলাদেশ কে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে একাট্টা হয়ে কাজ করতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয়কে নিশ্চিত করতে আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আসুন আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী যাকেই নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠাবেন আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে তাকে বিজয়ী করবো ইনশাআল্লাহ। আর একটি কথা মনে রাখবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন নন, তিনি আপনাদের খোঁজ খবর রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্তে প্রবাহিত তিনি আপনাদের চাওয়া পাওয়া কে অবমূল্যায়ন করবেন না। আমাকে মনোনয়ন দিলে ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর-১ আহনকে ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকমুক্ত মডেল আসন রুপে গড়ে তুলব। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বোয়ালমারী পৌরসভার মেয়র মোজাফফর হোসেন মিয়া বাবলু, আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম জালাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সদস্য মোহাম্মদ আসাদুল করিম, আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম আহাদুল হাসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুবাস সাহা, জেলা পরিষদ সদস্য আবু জাফর সিদ্দিকী, শেখর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো ইস্রাফিল মোল্লা, সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো মজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সহিদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, মলয় কুমার বোস, রাহাদুল আকতার তপন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু , রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজার রহমান, দাদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোল্লা, ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির মোহাম্মদ সেলিম, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বর্ধিত সভায় অংশ গ্রহণ করেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments