কোলন, ২৩ জুন – জার্মানির বাজারে এবং ভোক্তাদের মাঝে প্লাস্টিকের বদলে পাটের ব্যবহার উদ্বুদ্ধ করতে কোলন নগরীতে উন্নয়ন সংস্থা বাসুগ জার্মানির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল দিনব্যাপী কর্মশালা। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নর্থরাইন ভেস্টফালিয়া রাজ্য সংসদের সদস্য বেরিভান আয়মাস এবং কোলনের সিটি মেয়র ডঃ রালফ হাইনেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাসুগ সভাপতি বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন বাসুগ জার্মানির প্রকল্প সমন্বয়কারী ও সাংবাদিক হোসাইন আব্দুল হাই।
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ শুধুমাত্র জার্মানির স্বার্থে নয় বরং সারাবিশ্বের বায়ু, মাটি, পানি এবং পরিবেশ রক্ষার্থে প্লাস্টিক পণ্য বর্জন করার উপর গুরুত্বারোপ করে এর বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী চালু করার আহ্বান জানান। এছাড়া শুধুমাত্র পাটই নয়, বরং প্লাস্টিকের সবধরনের পণ্য বর্জন করে তার বদলে কাঁচ, কাগজ, স্টিল, লোহা কিংবা কাপড়ের তৈরি পণ্যের বাজার এবং ব্যবহার বাড়াতে সকল শ্রেণীর মানুষের মঝে সচেতনতা সৃষ্টি করার উপর জোর দেন তাঁরা।
প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত আহমেদ বলেন, পরিবেশ এখন সারা পৃথিবীর জন্যেই – অর্থাৎ শুধু মানুষ নয় বরং সকল প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবন ও জীবিকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং প্লাস্টিক এই পরিবেশের উপর যে অভাবনীয় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে, তার বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এছাড়া বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা পাট থেকে যে বায়ো-প্লাস্টিক উৎপাদন করেছেন, সেগুলোর সম্প্রসারণ ঘটলে প্লাস্টিক এর অভিশাপ থেকে আমরা অনেকাংশেই রক্ষা পেতে পারি।
পরিবেশ ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এনআরডাব্লিউ এর সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় মিডিয়া পার্টনার ছিল জার্মান ভিত্তিক অনলাইন মিডিয়া আওয়ার ভয়েস। প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন বন-রাইন-জিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খুরশিদ হাসান।
বাসুগ জার্মানির সাধারণ সম্পাদক ডঃ এম এম ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিউনিখ হেল্মহোলৎস রিসার্চ সেন্টার এর অধ্যাপক ডঃ এনামুল হক। প্যানেল আলোচক ছিলেন বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর ডঃ সৈয়দ মাসুম আহমেদ চৌধুরী এবং জুটেক্স বাংলাদেশ এর বৈদেশিক পরিচালক এম কে ইব্রাহিম। আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন প্রফেসর ডঃ সিরাজুল ইসলাম, জার্মানি আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম বশিরুল আলম চৌধুরী সাবু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্মানির সভাপতি ইউনুস আলী খান, ডয়েচে ভেলের বাংলা বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান আব্দুস সাত্তার, জনপ্রিয় শিল্পী আব্দুল মুনিম, ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগের নূরুন্নাহার সাত্তার, বিশিষ্ট আঁকিয়ে মারুফ আহমেদ, হাউজ অফ ইন্টেগ্রেশন এর সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম, পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারক রিয়াদ তানভীর, বন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের গবেষক ডঃ মোহাম্মদ রবিউল হোসেন, সমাজসেবী স্নিগ্ধা বুলবুল এবং এএসজি জার্মানির প্রকল্প কর্মকর্তা মুনিমা সুলতানা।
কর্মশালায় নিজদের পাট ও কাপড়ের তৈরি নানা বাহারের আকর্ষণীয় পণ্য, প্রকাশনা এবং চিত্র প্রদর্শনী করেন এডা আফ্রিকা, সেরাজী ফাউন্ডেশন, ফর দ্য কিডস সেক এবং ভামোস এর কর্মীবাহিনী এবং কবি ও শিল্পী মীর জাবেদা ইয়াসমিন।