নগরকান্দায় দুই গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ২০


মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ওয়াজ মাহফিলের দোকান-পসরাতে ডেকে নিয়ে এক তরুণকে মারধরের প্রতিবাদে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। (১৮ জানুয়ারি) শনিবার সকাল ৮ টায় নগরকান্দা পৌরসভার মীরাকান্দা ও পাশ্ববর্তী ফুলসূতি ইউনিয়নের সলিথা গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

এতে প্রায় দুই ঘন্টা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় দুই গ্রামের ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে সলিথা গ্রামের মোস্তফা মাতুব্বরসহ (৫৫) দুইজন এবং মীরাকান্দা গ্রামের জবেদ মাতুব্বরের পুত্র নাঈম মাতুব্বর (১৭) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং বাকিরা নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এছাড়া সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে থানার ওসির হাত কেটে যাওয়াসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলী নিজেই নিশ্চিত করেন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

দুই গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার রাতে সলিথা গ্রামের আয়োজনে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ওয়াজ মাহফিলের দোকান-পসরাতে কয়েক তরুণের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সে সময় মীরাকান্দা গ্রামের নাঈম মাতুব্বর (১৭) নামে এক তরুণের মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে দুই গ্রামবাসী। সে জের ধরে আজ সকালে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-সরকি, কাতরা, রামদা, ইট-পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।

সলিথা গ্রামের বাসিন্দা ও গ্রাম্য মাতুব্বর আকতার হাদি অভিযোগ করে বলেন, গতকাল রাতে ওয়াজের দোকান এলাকায় মীরাকান্দা গ্রামের কয়েক যুবক ছোট ছোট মেয়েদের বিরক্ত করার জেরে একজনকে মারধর করে বলে শুনেছিলাম। সেই জেরে আজ সকালে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-সরকি, কাতরা, রামদা নিয়ে সলিথা বাজারে অতর্কিতভাবে হামলা করে মীরাকান্দাবাসী। এ সময় মোস্তফা মাতুব্বর নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করে এবং আমার দোকানসহ ৫ থেকে ৬টি দোকানপাট ভাংচুর করে তাঁরা। পরে আমরা জোটবদ্ধ হয়ে তাঁদের ধাওয়া করি। এতে আমাদের গ্রামের ৭ জন আহত হয়।

অপরদিকে মীরাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. জিয়াউর রহমান জানান, গতকাল সলিথা গ্রামের ওয়াজে আমাদের গ্রামের নাঈমকে পূর্ব শত্রুতাবশত ডেকে নিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। এর জেরে আজ সকালে আমাদের গ্রামের সকল মানুষ একত্র হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপরই দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় কাইজ্জ্যা (সংঘর্ষ) বন্ধ হয়।

এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলী বলেন, পূর্ব শত্রুতার বিরোধে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তখন আমার হাত কেটে যায়। এছাড়া পুলিশের আরও ৪ জন আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

১৮ জানুয়ারি ২০২৪

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments