মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে এতিমের বরাদ্দকৃত টাকা, বিভিন্ন ভাতা ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনটি মামলা করেছেন জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার(১৮ মার্চ) রাতে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন উপ-পরিচালক রতন কুমার। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে মামলা তিনটি করেন দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন।
আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে কক্সবাজার সমাজসেবা কার্যালয়ে প্রবেশন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউ খালি ইউনিয়নে দশহাজার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জেলার নগরকান্দা উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলেন।
একটি মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নগরকান্দা উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এতিমদের বরাদ্দকৃত সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন এবং তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি পূর্বক শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
আরেকটি মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার জন্য ২০২০-২১ অর্থবছর সহ বিভিন্ন সময় অবিতরনকৃত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতার ৫৮ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন পূর্বক বিতরণ না করে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে তিনি আত্মসাৎ করেন।
অপর আরেকটি মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি তহবিল থেকে ২০১৮ হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৩৬ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা উত্তোলন-পূর্বক তিনি নিজ কাজে ব্যবহার করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন,আমি চাকুরীকালীন সময়ে আমার অফিসের নজরুল ইসলাম নামের এক সরকারি কর্মকর্তার সাথে আমার বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে তিনি আমার নামে দুদুকে মিথ্যা অভিযোগ করেন। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় মামলা হলে তদন্তে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মূলত এতিমরা না থাকায় টাকাগুলো দেওয়া হয়নি। তবে বর্তমানে টাকাগুলো ব্যাংকে রয়েছে। এছাড়া আমার জমি বিক্রিসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোনের টাকা ব্যাংকে লেনদেন হয়, এ কারণে দুদক সন্দেহ করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সম্মানিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার বলেন, সাবেক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ জমা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে জেলা কার্যালয় অনুসন্ধান করেন এবং অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে আসে। তিনি মোট ১ কোটি ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৫০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে পৃথকভাবে তিনটি মামলা করা হয়েছে।