চরভদ্রাসনে যমজ দুই বোনকে ইভটিজিংকারী বখাটেদের ধরতে নরে উঠেছে প্রশাসন, গ্রেপ্তার এক

ষ্টাফ রিপোর্টার: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বখাটেদের ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আতঙ্কে দিন পার করছে কিশোরী জমজ দুই বোন। পরিবারের লোকের পাহারায় স্কুলে যাচ্ছে তারা।

বৃহস্পতিবার থেকে ওই বখাটে চক্রকে ধরতে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলা পুলিশ, র‌্যাব ও ডিবি। থানায় মামালা গ্রহনের পরে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করে তাদের পিতা। স্থানীয় গাজীরটেক ইউনিয়নের চরহাজিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তারা।

বৃহস্পতিবার সকালে যমজ দুই বোনের সাথে কথা বলে ও উক্ত অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে এলাকার কিছু বখাটে তাদেরকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করে আসছিল। গত শনিবার দুবোনের একজন তার ভাইয়ের মোটরসাইকেলে চড়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটেরা তাকে হাত ধরে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তার ভাই রাশেদুল বাধা দিলে উক্ত ইউনিয়নের বেপারী ডাঙ্গী গ্রামের চিহ্নিত বখাটে মিজান, তরিবুর, আকমাল, রাজু, রনি, রাশেদ, ইমরান বেপারী ও আইয়ুব খালাসী তাকে পিটিয়ে আহত করে বখাটেরা। স্থানীয়দের ও পরিবারের সদস্যদের দাবি বখাটেদের শাস্তি ও নিরাপদে কিশোরী দ্ইু জনের পড়ালেখার সুযোগ করে প্রশাসন।

দুই কিশোরীর মা বলেন, বখাটেদের ভয়ে আমরা ঠিকমত বাড়ীর কাজ কর্মও করতে পারছি না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

চরহাজিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আযাদ আবুল কালাম বলেন,স্কুল পরিচালনা সুষ্ঠু পরিবেশ প্রয়োজন। বখাটের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে, এটা প্রত্যাশা করি প্রশাসনের কাছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ওই বখাটেরা প্রায়ই স্কুলের আশে-পাশে অনেক অন্যায়ের কাজ করে থাকে । কেউ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। কারন স্থানী প্রভাবশালী মাতুব্বররা তাদের আশ্রয় দেয়। কয়েক জন জনপ্রতিনিধিও তাদের পেছনে রয়েছে।

এদিকে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের সাথে চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি তবে চর হাজিগঞ্জ বাজারে অভিযুক্ত মিজানের পিতা কে পাওয়া যায়। তিনি তার ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, মেয়েদেরকে বিরক্ত করায় মিজান উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করতে গেলে মিজান মেয়ে পক্ষের আক্রমনের শিকার হয়।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের সনাক্ত করে বিভিন্ন স্থানে খোজ করছি। এছাড়া র‌্যাব ও পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না, সে যতোই ক্ষমতাশালী হোক না কেনো। শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে চাই।

এদিকে ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন ও অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের।
তিনি বলেন, যারাই এই ধরনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না ইভটিজিংকারিদের।

চরভদ্রাসন থানার ইনর্চাজ রাম প্রসাদ ভক্ত জানান, বুধবার রাতেই আমার নয় জনকে আসামী করে থানায় মামলা নিয়েছি। ইতিমধ্যে তরিবুর রহমান খালাসিকে আমার গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের ধরতে জোড় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

ফরিদপুর র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইচ উদ্দিন জানান, ইভটিজিংকারিদের হাত যতো লম্বা থাক না কেনো, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন কোনো রকম ছাড়া দেবে না তাদের।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments