উন্নয়নে পিছিয়ে নেই সালথা উপজেলা

মনির মোল্যা : উন্নয়নে পিছিয়ে নেই সালথা উপজেলা। ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার এক সময়ের বাজার কেন্দ্রীক পরিচিত জনপদের নাম সালথা। উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া বাজারটি আটঘর, রামকান্তপুর, ভাওয়াল, গট্টি ও সোনাপুর ইউনিয়নের মধ্যেস্থলে স্থাপিত হওয়ায় এ সব ইউনিয়নের গ্রামবাসীর কাছে বিভিন্ন কারনে সালথা বাজারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংঘর্ষ প্রিয় এলাকা হিসেবেও সালথা এলাকা ফরিদপুর জেলায় একটি অপ্রিয় নাম হলেও আজ তার উল্টো দিকে ধাবিত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ।

জনগণের দাবীতে সরকার ১৯৯৮ সালে নগরকান্দা থানাকে বিভক্ত করে রামকান্তপুর, আটঘর, ভাওয়াল, গট্টি, সোনাপুর ও যদুনন্দী এই ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করে সালথা থানা। ২০০৮ সালে নগরকান্দা উপজেলার মাঝারদিয়া ও বল্লভদী ইউনিয়নকে নিয়ে মোট ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করেন সালথা উপজেলা। পরবর্তীতে মাঝারদিয়া ও বল্লভদী ইউনিয়নকে নগরকান্দা থানা থেকে সালথা থানায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সর্ব প্রথমে গট্টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন থেকে সালথা থানা ও পরে উপজেলার পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন। তারপর সালথা বাজারের সন্নিকটে চলতে থাকে থানা ও উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ। ভবন নির্মাণ শেষে প্রথমে থানা ও পরে উপজেলা পরিষদের দপ্তর স্থানান্তর করা হয় নবনির্মিত ভবনে। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের মধ্যে নির্মাণ করা হয় অত্যাধুনিক সম্মেলন কেন্দ্র, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধার লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনে স্থাপন করা হয় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সৌর প্যানেল। একই সাথে স্থাপন করা হয় মিনি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র।

এদিকে গট্টি ইউনিযনের বালিয়া বাজারের সংলগ্ন দ্রুত গতিতে নির্মিত হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন। তা খুব শীগ্রই উদ্বোধণ হবে বলে জানা গেছে। সালথা কলেজ রোডের সামান্য পাশে নির্মিত হয়েছে প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল। উপজেলা পরিষদের চার দেওয়ালের মধ্যে নির্মিত হয়েছে রেষ্ট হাউস কাম কমিউনিটি সেন্টার, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ ও উপজেলা শিল্প কলা একাডেমী । এ ছাড়াও উপজেলা পরিষদের সামনে নির্মিত হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন। খাদ্য গুদাম নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। প্রস্তুতি চলছে একটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের কাজ।

অন্য দিকে স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের উদ্যোগে সম্প্রসারিত হয়েছে সালথা বাজার। নারী ক্রেতাদের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে মহিলা মার্কেট ও বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন বহুতল মার্কেট ও বাসভবন। মাথা উচু করে জানান দিচ্ছে সালথার সমৃদ্ধি। খোলা হয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংক শাখা। সাংবাদিকদের একত্র থেকে সুষ্ঠ ও নিরোপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের জন্য রয়েছে একটি প্রেসক্লাব। বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক সড়ক। বেসরকারি উদ্যোগে দু’টি জুট মিল স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যেই ক্রয় করা হয়েছে প্রয়োজনীয় জমি। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়ীরা আসছেন কারখানার জন্য জমি কিনতে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরে অবহেলিত সালথাবাসী আজ তাদের সুদিন ফিরে পেয়েছে। অভাবনীয় উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার মান বেড়ে যাওয়ায় দিনদিন সংঘর্ষের হারও কমে গেছে। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর জন্য অভাবনীয় উন্নয়নে নিজেকে সালথার লোক হিসেবে পরিচয় দিতে এখন গর্ববোধ করি।

আর এসব মরহুম চৌধুরী ইউনুচ আলী নিজের জমি দান করে সালথা বাজার প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন। অবহেলিত এ জনপদের উন্নয়নে এলাকাবাসী যে সব স্বপ্ন দেখতেন সেটা আজ বাস্তবে পরিনত হয়েছে। সালথা আজ ছোট নগরে পরিনত হয়েছে। সালথাবাসীর স্বপ্ন পুরনে অবদান রাখায় আমরা স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নিকট চির জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments