নিজস্ব প্রতিনিধি : ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ অর্গানাইজেশনের সভাপতি ও অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ এ্সোসিয়েশনের মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ ইনু রোম প্রবাসী সাংবাদিকদের মত বিনিময় সভা মিলিত হন। আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য ইনভেষ্ট সামিটকে সফল করার লক্ষে সাংবাদিকদের করনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ইতালির রোমের পিয়াছা ভিক্টরিয়ার লিটিল ইন্ডিয়া রেষ্টোরেন্টের হল রোমে ইতালিস্থ সাংবাদিক প্রতিনিধি দের সাথে মতবিনিময় কালে প্রবাসীদের নিয়ে তার ভাবনার কথা তুলে ধরেন। দৈনিক প্রবাসী সম্পাদক রিপন খানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশী সাংবাদিক সমিতি ইতালী (এনআরবিজাই) এর সাধারন সম্পাদক চ্যানেল এস প্রতিনিধি রিয়াজ হোসেনের পরিচালনা মতবিনিময় সভায় ইতালিস্থ বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ কালে ইউরোপ প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী করতে অনুরোধ করে কাজি এনায়েত উল্লাহ্ ইনু বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এবং বাংলা শিল্প সংস্কৃতিকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে আমাদের সবাইকে একসাথে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’
বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদার ও বিনিয়োগ বান্ধব দেশ। গুরুত্বপূর্ণ ভূ-কৌশলগত অবস্থান ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন শ্রম মজুরির কারণে সহজেই এ দেশে বিনিয় করে লাভবান ও দেশের উন্নয়ে কাজ করা সম্ভব।
তিনি সাংবাদিকদের কলমের মাধ্যমে ইউরোপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারনে আরও বেশি বিনিয়োগের উৎসাহী করতে বলেন।
তিনি মিডিয়া কর্মিদের বলেন আপনারা যারা বিভিন্ন অনলাইন ,পত্রিকা , টেলিভিশনে কাজ করেন, আপনাদের সততা ও দায়িত্ব জনগনের মাঝে খবর পৌছানো ও জনগনকে উৎসাহী করা । পাশাপাশি আমরা যারা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করি তাদের মনিটরিং করা ও আমরা ঠিক ভাবে কাজ করছি কিনা।
আপনাদের পবিত্র এই দায়িত্ব আপনি আপনার জন্য পালন করবেন না এই দায়িত্ব পালন করবেন আপনার আমার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য এ দায়িত্ব আমাদের মাতৃ ভূমির জন্য।
তিনি প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সম্পদ ও দক্ষতাকে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমানে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তথা ইতালিতে পোশাক ও চামড়া শিল্পসহ অন্যান্য খাতে যেভাবে বিনিয়োগ করছেন, তারা বাংলাদেশেও অনুরূপভাবে বিনিয়োগ করতে পারেন। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসীগণ দেশে যেমন শিল্প প্রসার এবং কর্মসংস্থানে অবদান রাখতে পারবেন, তেমনি তাদের প্রযুক্তিগত ও ব্যবসায়িক দক্ষতা থেকেও বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে।
আমাদের দেশের মানুষ এখন এম পি মন্ত্রী কে বিশ্বাস করেনা কিন্তু এক জন প্রবাসীকে বিশ্বাস করে তাই দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি ইউরোপের ধনীদেশ গুলির সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন এই দেশ গুলি ধনী হয়েছে প্রযুক্তি আবিষ্কার করে কিন্তু আমাদের কোন কিছু আবিষ্কার করতে হবে সংবদ্ধ হয়ে এই আবিষ্কৃত সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা সফল হতে পারি।
জনাব কাজি এনায়েত উল্লাহ্ ইনু আরো বলেন সরকারের পক্ষ থেকে প্রবাসী বিনিয়োগ কারীদের বিভিন্ন বিনিয়োগ খাতে নিরাপদ সু্যোগ-সুবিধা প্রদান করে থাকেন এবং বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময় খাতগুলো সম্পর্কে আগ্রহী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে টেক্সটাইল, চামড়াজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য, রাসায়নিক ও পেট্রোকেমিক্যাল, কৃষি ভিত্তিক শিল্প, কাঁচা পাট, কাগজ, রেশম শিল্প, হিমায়িত খাদ্য (বিশেষত চিংড়ি), পর্যটন, কৃষি, ক্ষুদ্র শিল্প, সফটওয়্যার ও ডাটা প্রসেসিং ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের আহবান জানান। তিনি ব্যক্তি স্বার্থকে সমষ্টিগত ভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে মূল্য দিয়ে অর্জিত আমাদের বাংলাদের তাই আমাদের সমৃদ্ধি আমাদের সাধারন মানুষের স্বার্থে ব্যবহার করা অতি প্রয়োজনীয়।
আমাদের সংঘবদ্ধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে তিনি বলেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা যুদ্ধ করে আমাদের একটি স্বাধীন দেশ এনে দিয়েছেন । আমাদের পরবর্তি প্রজন্মের জন্য একটি “সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষে আমাদের আরো একটি যু্দ্ধ করতে হবে।
সেই যুদ্ধে যদি আমরা কিছু সংখ্যক যুদ্ধা মরে গিয়েও নতুন প্রজন্মের জন্য আধুনিক বাংলা উপহার দিতে পারি তবেই জীবন স্বার্থক।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিনিয়গের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে এবং আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে জানিয়ে দেশের উন্নয়নে সবাই কে কাজ করার আহবান জানান।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আমাদের কন্ঠ টুয়েন্টি ফোর ডট কমের সম্পাদক এ্যাডঃ আনিচুজ্জামান, প্রবাস কথার ইতালি প্রতিনিধি এমকে রহমান লিটন, এনটিভির সাবেক প্রতিনিধি এ কে জামান, দৈনিক যুগান্তর ও বাংলা ভিশন প্রতিনিধি জমির হোসেন, ডিবিসি প্রতিনিধি আমির হোসেন লিটন, সাংবাদিক এলিন আহমেদ মিঠু, ধুমকেতু টেলিভিশনের সিইও শিমুল রহমান, আমরা ইতালি প্রবাসীর এডমিন স্বপন দাস, আনন্দ টিভির প্রতিনিধি মনিকা ইসলাম, ফটো সাংবাদিক আরজ আলী, আরিফুল হক প্রমুখ।