প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফরে আজ সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের পথে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্রিটিশ রাজধানী লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, মন্ত্রি পরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধানগণ, উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
একই দিনে লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে বিমানটির হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং একই দিনে তাঁর জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেজের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন- এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালিজুলেইদ এবং নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও’র সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
এ বছর সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মেকিং দ্য ইউনাইটেড নেশন্স রিলেভেন্ট টু অল পিপল : গ্লোবাল লিডারশিপ এ্যান্ড শেয়ারড রেসপনসিবিলিটিস ফর পিসফুল, ইকুইটএ্যাবল এ্যান্ড সাসটেইনএ্যাবল সোসাইটিজ।’
প্রধানমন্ত্রী এবারে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাঁর আগেকার ৫-দফা প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান।
ব্রিটিশ রাজধানীতে দুই দিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
বিমানটির ঐদিনই স্থানীয় সময় বিকেল ১টা ৪০ মিনিটে নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা পর্ব শেষে একটি সুশোভিত মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে প্রধানমন্ত্রীকে নিউ ইয়র্কের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের মিডটাউনের হোটেল হিলটনে প্রবাসী বাংলাদেশী আয়োজিত এক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা, অভিবাসন, ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তুলে ধরবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগামী ১ অক্টোবর সকালে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন হয়ে দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে, জানান প্রেস সচিব।
সূত্র: বাসস