বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাতে কোন সার্ভিস চার্জ দিতে হবে না প্রবাসীদের, খরচ বহন করবে সরকার। আসছে বাজেটে এ ব্যাপারে ভর্তুকি বরাদ্দ থাকবে।
শনিবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ই.আর.এফ এর সাথে প্রাক বাজেট আলোচনায় এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মন্ত্রী জানান, আসছে বাজেটে থাকবে না কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, অর্থ পাচার রোধে তুলে দেয়া হবে জমির নির্ধারিত দাম। একই সঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার সময় এসেছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
বাজেটের আগে আগে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনার অংশ হিসেবে শনিবার সচিবালয়ে অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী। শোনেন ইআরএফ সদস্যদের বাজেট ভাবনা ও পরামর্শ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, শিক্ষার সুযোগ সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজ শেষ, এখন বাড়াতে হবে মান। মন্ত্রী জানান, গবেষণায় এবার থাকবে বিশেষ বরাদ্দ।
মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা খাতকে আমরা সম্প্রসারণের চেষ্টা করেছি। আমরা প্রাইমারি পর্যায়ে অনেকটা সফলও হয়েছি। সেকেন্ডারি এডুকেশনেও সেটা অনেক বেড়েছে। প্রত্যেকটিতে এনরোলমেন্টটা বেড়েছে। মানটা মোটেই বাড়েনি। তাই এখন মানের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার মানের দিকে নজরের দাবিটা এখন শিক্ষার্থী ও গার্ডিয়ানদের কাছ থেকেও আসছে। আমরা এ ব্যাপারে সচেতন। পাঠ্য বই এখন আধুনিকায়নে সংস্কার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষক তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষক গড়া অতটা সহজ নয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা।’
পুঁজি বাজার এতদিন ফাটকা বাজার হিসেবে পরিচিত হলেও, এখন ভাল অবস্থানে এসেছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজি বাজারে তালিকাভুক্তর আহ্বান জানানো হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পুঁজি বাজার এতদিন ফাটকা বাজার না এখন ভাল অবস্থানে আছে। এখন আমি কোম্পানিকে বলতে পারি তোমারা শেয়ার ছাড়ো। আর যেসব বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান আসেন না নাও ইউ হেভ এ মার্কেট দেয়ার।’
সম্প্রতি রেমিট্যান্সের পরিমাণ অনেক কমে এসেছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, বিনা চার্যে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাতে পারবে প্রবাসীরা। আসছে বাজেটে থাকবে না কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, ব্যবস্থা নেয়া হবে টাকা পাচারের বিরুদ্ধে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা ল্যান্ড প্রাইস ঠিক করে দেই। কিন্তু বাস্তবে জমির দাম অনেক বেশি। তাই বেশি দামে জমি বিক্রি করে। এই টাকা কি করবেন। এটা এদেশে ব্যবহার করতে পারে না। কালো টাকা।’
“তাই এখন আমরা কোনো সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে না দেওয়ার চিন্তা করছি।”
তিনি বলেন, ‘জমি কেনাবেচায় অপ্রদর্শিত অর্থই কালো টাকার অন্যতম উৎস। পরবর্তীতে এ কালো টাকা তারা বিদেশে পাচার করে। তাই পাচার বন্ধে আগামী বাজেটে জমির সর্বনিম্ন নির্ধারিত মূল্য পদ্ধতি তুলে দেওয়া হবে।’
রেমিটেন্স বাড়ানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, ‘এটাকে বাড়ানোর জন্য গতকাল প্রধানমন্ত্রী কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন এখন থেকে রেমিটেন্সের ওপর চার্জ আর করবেন না। আই থিংক উই উইল ডু ইট। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় আমরা এটা করব। তাদের (প্রবাসীদের) আর টাকা পাঠানোর জন্য পয়সা দিতে হবে না।’
আসছে বাজেটে মূল্য সংযোজন কর আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ খাত থেকে ৪০ শতাংশ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই সঙ্গে আয়কর বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও রাজস্ব বোর্ড একযোগে কাজ করবে বলেও জানানো হয় প্রাক বাজেট আলোচনায়।