আমীর চারু বাবলু :মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতির সন্তান ‘জয়িতা’ কে আনুষ্ঠানিক ভাবে দত্তক দিল বোয়ালমারী উপজেলা প্রশাসন। গত ডিসেম্বরের ২১ তারিখে রাস্তায় প্রসব কাতর মানসিক ভারসাম্যহীন একজন প্রসূতিকে নিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মী গাজী রাহাতুজ্জামান সেতু , মো. আল আমিন, মো. রাজিব মিয়া যখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন তখন এগিয়ে আসেন সাংবাদিক আমীর চারু বাবলু ও সুমন খান । তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তৎক্ষণাৎ বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন দায়িত্ব নেন মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতির । ভর্তি করিয়ে দেন বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে প্রসূতিকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তাপস বিশ্বাস। প্রসব সমস্যার সাথে অনুসঙ্গ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে চিকিৎসকগণ তিন দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখেন, প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়।
২৫ ডিসেম্বর ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে সিজারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হয় জয়িতা’র । উপজেলা প্রশাসন ঘোষণা দেন জয়িতার অভিভাবকত্বের। বেশ কয়েকটি দম্পতি জয়িতার অভিভাবকত্ব গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করে । আগ্রহীদের স্বাক্ষাতকার শেষে আলফাডাঙ্গা উপজেলার মিঠাপুর গ্রামের নিষ্সন্তান সাহিদুল ইসলাম দম্পতির কোলে শর্ত সাপেক্ষে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন ও জয়িতার পৃথিবীর আলো দেখাতে সহায়তা প্রদান কারি স্বেচ্ছাসেবকগণ ।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের কার্যালয়ে সাহিদুল ইসলাম দম্পতির কোলে তুলে দেওয়া হয় জয়িতাকে। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহধর্মিণ নাসরিন ফেরদৌস চৌধুরী , বোয়ালমী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল সিকদার, সাংবাদিক ও কবি আমীর চারু বাবলু, বাংলা টিভির প্রতিনিধি খান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, পাক্ষিক নজীর বাংলা সম্পাদক মামুন, সাংস্কৃতিক কর্মী গাজী রাহাতুজ্জামান সেতু , আল্ আমিন , রাজিব, ঘুরিফিরি ফরিদপুরের মডারেটর শুভঙ্কর শুভ প্রমুখ।
এসময় জয়িতার দত্তক পিতা-মাতার হাতে জয়িতার জন্য উপহার সামগ্রী তুলে দেন ইউএনওর সহধর্মিণ নাসরিন ফেরদৌস চৌধুরী এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন । জয়িতার জন্য প্রবাসী সাংবাদিক, দৈনিক ঢাকাটাইমস এর ইউরোপ ব্যুরো প্রধান কমরেড খন্দকারের পাঠানো পাঁচ হাজার টাকাসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দশ হাজার টাকা তুলে দেন জয়িতার দত্তক পিতা-মাতার হাতে। তিনি এসময় জয়িতা’র মাকে উদ্ধারকারী, চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী ও আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।